Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

বীজ উৎপাদনে অনুসরণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ

বীজ উৎপাদনে অনুসরণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ
ড. মো: আব্দুল মালেক
কৃষির উন্নয়নে প্রধান ও মুখ্য উপকরণই হচ্ছে বীজ আর লাভজনক ফসল উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে বীজ। গবেষণায় দেখা গেছে একমাত্র উন্নত মানের ও মানসম্পন্ন বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের ফলন শতকরা ২০ ভাগ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব।  
মানসম্পন্ন তথা উন্নত মানের বীজের বৈশিষ্ট্য
প্রচলিত একটি স্লোগান আছে ‘ভালো বীজে ভালো ফসল’। আর এ ভালো বীজ মানেই গুণগত মানসম্পন্ন ও উন্নতমানের বীজ। মানসম্পন্ন বীজ বিভিন্ন শ্রেণির হতে পারে যেমন- নিউক্লিয়াস বা মৌল বীজ, প্রজনন বীজ, ভিত্তি বীজ ও প্রত্যায়িত বীজ।
উন্নত গুণাগুণের মানসম্পন্ন বীজ : উন্নত গুণাগুণের মানসম্পন্ন বীজের বিস্তারিত বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ-
   বিশুদ্ধ  বীজ হতে হবে কৌলিতাত্ত্বিকভাবে বিশুদ্ধ;
    বাহ্যিকভাবে দেখতে উজ্জ্বল বর্ণের হবে যা ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে;
    ভালো বীজ অবশ্যই সকল ধরনের মিশ্রণ হতে মুক্ত হতে হবে অর্থাৎ বীজ জড় পদার্থ, আগাছা বীজ, অন্য ফসল বা জাতের বীজের মিশ্রণ থাকা চলবে না;
    বীজ হতে হবে পুষ্ট ও তুলনামূলকভাবে ভারী, যে বীজে খাদ্যের মজুদ থাকবে বেশি ফলে বীজ গজাবে দ্রুত, বেশি হবে প্রাথমিক বৃদ্ধি, চারা হবে সুস্থ, সবল ও রোগ-বালাইয়ের প্রতিরোধী, কুশি/ডালপালার সংখ্যা হবে বেশি, প্রতি গাছে দানা/বীজের সংখ্যা হবে বেশি আর সর্বোপরি ফলন দিবে বেশি, কৃষি হবে লাভজনক আর বাড়বে দেশের মোট উৎপাদন আর অবদান রাখবে দেশের কাক্সিক্ষত খাদ্য ও পুষ্ট নিরাপত্তায়;
    জাত ভিত্তিক বীজের আকার ও আয়তন তথা দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও ওজন থাকবে নির্দিষ্ট;
    বীজের আর্দ্রতা থাকবে নির্ধারিত মাত্রায় (ধান, গম ও ভুট্টায় ১২, ডালজাতীয় শস্যে ৯, পাটে ৯ ও সরিষায় ৮%);
    বীজ হবে ক্ষতিকারক রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে মুক্ত ও নীরোগ; এবং
    সর্বোপরি বীজের অংকুরোদগম ক্ষমতা হতে হবে নির্ধারিত মানের যেমন ধানে সর্বনিম্ন ৮০%, গমে ৮৫%, ডাল শস্যে ৭৫-৮৫% আর শাক-সবজির বীজে ৭০-৭৫%।
উল্লিখিত উন্নত গুণাগুনের মানসম্পন্ন বীজ পেতে হলে বীজের পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যথা বীজ উৎপাদনের জন্য এলাকা ও জমি নির্বাচনসহ সার্বিক কৃষি পরিচর্যা, বীজ ফসল সংগ্রহ, মাড়াই, মাড়াই পরবর্তী প্রক্রিয়াজাতকরণ যেমন: বীজ ঝাড়াই, শুকানো, পুষ্ট বীজ বাছাই/পৃথককরণ ও বীজ সংরক্ষণে সতর্কতাস্বরূপ মেনে চলতে হবে।
এলাকা ও জমি নির্বাচন
কোন ফসল সারা দেশের জন্য চাষাবাদের উপযোগী হলেও উন্নত মানের ও মানসম্পন্ন বীজ দেশের সকল অঞ্চল বা এলাকা হতে পাওয়া যাবে না। তাই কোন নির্দিষ্ট ফসলের বীজ উৎপাদন নির্দিষ্ট এলাকা/এলাকাসমূহে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
বীজ উৎপাদন এলাকা নির্দিষ্ট করার পর জমি নির্বাচনের সময় বিবেচনা করতে হবে যে জমিতে পূর্বের বছরে একই ফসলের অন্যকোন জাত চাষ করে থাকলে সে জমি বীজ উৎপাদনের জন্য নির্বাচন করা যাবে না; বীজ উৎপাদনের জন্য নির্বাচন করতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও উর্বর জমি; এবং পরিহার করতে হবে ছায়াযুক্ত স্থান, কারণ ছায়াযুক্ত স্থানে সালোক সংশ্লেষণ কম হবে এবং গাছ হবে দুর্বল যা সামান্য ঝড় বা প্রতিকূলতায় হেলে পড়বে ফলে বীজ হবে অপুষ্ট ও কম অংকুরোদগম ক্ষমতার।    
উপরোল্লিখিত বিষয়সমূহ মেনে চললে বীজের কৌলিতাত্ত্বিক বিশুদ্ধতা রক্ষাসহ পাওয়া যাবে উজ্জল বর্ণের শতভাগ পুষ্ট উচ্চ অংকুরোদগম ক্ষমতাসম্পন্ন বীজ।
পৃথকীকরণ দুরত্ব
কোন ফসলের জাতের বীজ উৎপাদন প্লট অন্য জাত হতে অবশ্যই নির্দিষ্ট পৃথকীকরণ দূরত্বে স্থাপন করতে হবে।
বীজ উৎপাদনে পৃথকীকরণ দূরত্ব ফসলের পরাগায়ন পদ্ধতি ও বীজের শ্রেণির উপর নির্ভর করে। যেমন স্বপরাগায়িত  ধানের প্রজনন বীজ, ভিত্তি বীজ ও প্রত্যায়িত বীজ উৎপাদনে প্রতিক্ষেত্রে পৃথকীকরণ দূরত্ব ৩ মিটার হলেও স্বপরাগায়িত তিলের ক্ষেত্রে এ দূরত্ব হলো যথাক্রমে ২০০, ১০০ ও ৫০ মিটার এবং টমেটোতে যথাক্রমে ৫০, ৫০ ও ২৫ মিটার ।
বীজের কৌলিতাত্বিক বিশুদ্ধতা রক্ষার্থে পৃথকীকরণ দূরত্ব অবশ্যই মেনে চলতে হবে, কারণ পৃথকীকরণ দূরত্ব বজায় রাখতে পারলেই দূর করা যাবে অনাকাংখিত পরাগায়ন ও নিশ্চিত হবে কাক্সিক্ষত পরাগায়ন এবং রক্ষিত হবে বীজের কৌলিতাত্ত্বিক বিশুদ্ধতা যা ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে রাখবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
রোপণ/বপন দূরত্ব
চারা রোপণে বা বীজ বপনে বা এমন দূরত্ব রাখতে হবে যাতে বীজ উৎপাদন প্লটে প্রতিটি গাছ পর্যাপ্ত আলো পায় এবং বাতাস চলাচল সহজতর হওয়ার পাশাপাশি পরিদর্শনসহ আন্তঃপরিচর্যা সহজতরভাবে করা সম্ভব হয়।
এজন্য সারি হতে সারির দূরত্ব স্বাভাবিক ফসল উৎপাদনের চেয়ে একটু বেশি রাখতে হবে যাতে রগিং বা বিজাত বাছাই তথা মিশ্রিত গাছসহ রোগ ও পোকায় আক্রান্ত গাছ এবং মিশ্রিত অন্যান্য ফসলের গাছ শনাক্তকরণ ও অপসারণ সহজতর হয়।
উপরোল্লিখিত বিষয় দু’টি মেনে চললে বীজের কৌলিতাত্ত্বিক বিশুদ্ধতা রক্ষা হবে, বীজে আগাছা ও অন্যান্য বীজের মিশ্রণ এবং বীজ রোগ ও পোকার আক্রমণমুক্ত হবে এবং শতভাগ পুষ্ট বীজ পাওয়া যাবে।
বিজাত বাছাই/রগিং
জাতের কৌলিক বিশুদ্ধতা রক্ষার্থে রগিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচিত জাতের সহিত সাদৃশ্যপূর্ণ নয় এসব গাছ তুলে সরিয়ে ফেলা নিশ্চিত করতে হবে;  
রগিং বা বিজাত বাছাই বৃদ্ধির ৩টি ভিন্ন ধাপে সম্পন্ন করতে হবে। যথা : ক. অঙ্গজ বৃদ্ধি পর্যায়, খ. ফুল আসার সময় এবং গ. পরিপক্ব পর্যায়ে।
ফসলের বৃদ্ধির তিনটি ধাপে সম্পন্ন করা হলেও অঙ্গজ বৃদ্ধি পর্যায়ে রগিং বেশি কার্যকর, কারণ এতে জাতের কৌলিক বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য কার্যকরী উপায় তথা শতভাগ অনাকাক্সিক্ষত পরাগায়ন রোধ করা যায়।
সংগ্রহ, মাড়াই, শুকানো ও সংরক্ষণ
    বীজ সংগ্রহ ও মাড়াই কাজে ব্যবহৃত যন্ত্র ভালোভাবে পরিষ্কার করে ও পর্যবেক্ষণ করে নিশ্চিত হতে হবে যাতে অন্য জাতের বীজ পূর্ব হতে যন্ত্রের গায়ে বা ভিতরে লেগে না থাকে।
    বীজের মিশ্রণ রোধে একাধিক জাতের মাড়াইয়ের স্থানের দূরত্ব পর্যাপ্ত রাখতে হবে, যাতে মাড়াইয়ের সময় বীজ ছিটকে অন্য জাতের সহিত মিশ্রিত হতে না পারে।
    বীজ শুকানো মেঝেতে যাতে গর্ত বা ফাটল না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা, আর থাকলেও তাতে যেন অন্য কোন বীজ ঢুকে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।
    শুকানোর সময় যাতে অন্য জাত বা অন্য ফসলের বীজের সহিত মিশ্রিত না হয় সেজন্য বীজ শুকানোর কাজে ব্যবহৃত ত্রিপল/নেট/কাপড় পরীক্ষা করে দেখা, যাতে এগুলোর গায়ে অন্য জাতের বা ফসলে বীজে লেগে না থাকে।
    কড়া রোদে বীজ প্রতিদিন ২-৩ তিন ঘণ্টা করে কয়েক দিন শুকানো যাতে বীজের অংকুরোদগম ক্ষমতা নষ্ট হয়ে না যায়।
    বীজ সরাসরি সিমেন্টের তৈরি খোলায় বা মেঝেতে না শুকিয়ে ত্রিপল বা চাটাইয়ের উপর শুকাতে হবে।
    বীজ এমনভাবে শুকাতে হবে যাতে ফসলভিত্তিক বীজের আর্দ্রতা নির্ধারিত আর্দ্রতার চেয়ে বেশি না থাকে (ধান বীজে ১২%, সরিষা বীজে ৮%, তিল বীজে ৯% এবং সয়াবিন বীজে ১২% থাকা প্রয়োজন)।
    শুকানোর পর বীজ ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে এবং অপুষ্ট বীজ আলাদা করে তা বাদ দিতে হবে, কারণ অপুষ্ট বীজের অংকুরোদগম ক্ষমতা কম থাকে, অংকুরোদগম বিলম্বিত হয়, চারা/গাছ দুর্বল হওয়ার রোগ ও পোকার আক্রমণ প্রতিহত করতে পারে না আর সর্বোপরি উৎপাদনশীলতাও কমে যায়।   
    মিশ্রণমুক্ত, নির্দিষ্ট আর্দ্রতায় শুকানো পরিষ্কার ও পুষ্ট বীজ গরম অবস্থায় সংরক্ষণ না করে ঠা-া অবস্থায় বায়োরোধী পাত্রে ঘরের তুলনামূলকভাবে ঠা-া জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে।
    সংরক্ষণের পূর্বে অবশ্যই বীজের অংকুরোদগম ক্ষমতা পরীক্ষা করে নিতে হবে।
উল্লিখিত নিয়ম মেনে সংগৃহীত, মাড়াইকৃত, শুকানো, বাছাইকৃত ও সংরক্ষিত বীজ অন্য জাত/ফসলের বীজের মিশ্রণমুক্ত, পুষ্ট ও উচ্চ অংকুরোদগম ক্ষমতাসম্পন্ন হবে। বীজ উৎপাদনের প্লটটি যদি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা হেলে পড়ে এবং যদি একসাথে ফুল না আসে বা অন্য কোন উপায়ে নষ্ট হয়ে যায় বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব না হয় তবে বীজের প্লটটিকে বাতিল করতে হবে।

লেখক :  পরিচালক (গবেষণা), বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা), ময়মনসিংহ-২২০২, মোবাইল : ০১৭১২-১০৬৬২০; ই-মেইল: malekbina@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon